নিজের রেল স্টেশনে ব্যবসা বা দোকান করুন! মাত্র ১৫০০ টাকায়, ব্যবসা করার সুযোগ দিচ্ছে ভারতীয় রেল।

সরকারি কিংবা বেসরকারি চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে আধুনিক সময়ে বিপুল পরিমাণে শিক্ষিত যুবক-যুবতী লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই এই ক্ষেত্রে প্রচুর পরিমাণে প্রতিযোগিতা থাকার জন্য অনেক সময় যোগ্য চাকরিপ্রার্থীরাই বেকারত্বের সম্মুখীন হয়ে থাকেন।
এইসবের পাশাপাশি বিভিন্ন সরকারি কিংবা বেসরকারি সংস্থার দুর্নীতির খবর তো বারে বারেই উঠে আসে খবরের কাগজের পাতায়। এই অবস্থায় যুবক-যুবতীদের কাছে ব্যবসায় একটি অন্যতম বিকল্প হতে পারে।
তাই ভারতবর্ষের যুবক যুবতীদের জন্য ভারতীয় রেল বিভাগের পক্ষ থেকে দুর্দান্ত ব্যবসার সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে। বর্তমানে চাকরির ক্ষেত্রে একাধিক সমস্যার সম্মুখীন হওয়ার কারণে যুবক যুবতীদের ব্যবসার প্রতি ঝোঁক যথেষ্ট পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে।
এই সমস্ত যুবক যুবতীদের জন্য এবার ব্যবসা বাড়ানোর সুযোগ করে দিতে চলেছে ভারতীয় রেলওয়ে। আপনি যদি এই বিষয়ে ইচ্ছুক হয়ে থাকেন, তাহলে অবশ্যই শেষ পর্যন্ত আমাদের প্রতিবেদনটি পড়বেন।
রেলওয়ের ভোকাল ফর লোকাল উদ্যোগ
ভারত সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন ক্ষুদ্র ব্যবসাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য এই দুর্দান্ত প্রকল্পটি চালু করা হয়েছে। ‘Vocal for Local’ নামক এই দুর্দান্ত প্রকল্পের ‘One Station One Product’ -উদ্যোগের সাহায্যে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে গ্রামে গঞ্জে ছড়িয়ে থাকা বিভিন্ন মানুষের ক্ষুদ্র ব্যবসা কিংবা হস্তশিল্পকে জনসমক্ষে পরিচয় দেওয়ার প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।
Read More: যেকোন ব্যাঙ্কের গ্রাহক সেবা কেন্দ্র বা CSP কিভাবে নেবেন? ডকুমেন্ট, ইনভেস্টমেন্ট, ইনকাম?
এর ফলে যেমন ভারতবর্ষের গ্রামে গঞ্জে আনাচে-কানাচে লুকিয়ে থাকা বিভিন্ন শিল্পের বহিঃপ্রকাশ ঘটবে তেমনি পরিচিতির অভাবে হারিয়ে যেতে থাকা বিভিন্ন শিল্প পৌঁছে যাবে মানুষের ঘরে ঘরে।
রেলের পক্ষ থেকে এমন উদ্যোগের কারণ
ভারতবর্ষের এক জায়গা থেকে একাধিক জায়গায় রেলের বিস্তার রয়েছে। রেলওয়ের এই জালিকাকৃতি বিস্তারের সাহায্যে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে ক্ষুদ্র এবং মাঝারি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত মানুষদের এবং হস্তশিল্পীদের জায়গা করে দেওয়া হচ্ছে।
ভারতবর্ষে রেলের থেকে বেশি বিস্তার কেন্দ্রীয় সরকারের কোন দপ্তরেরই নেই। তাই স্বাভাবিকভাবেই ওদের সংখ্যক ব্যবসায়ীদের এই দুর্দান্ত প্রকল্পের আওতায় আনার জন্য ভারতীয় রেল দপ্তরকেই বেছে নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে ‘One Station One Product’ উদ্যোগ
ভারতবর্ষের সংস্কৃতিক রাজধানী কলকাতা বা তার আশেপাশের এলাকার হস্তশিল্পী কিংবা স্থানীয় ব্যবসায়ীদের উন্নতির লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে এই রাজ্যের হাওড়া এবং শিয়ালদা লাইনের প্রায় ১০০ টির বেশি স্টেশনকে নির্বাচন করা হয়েছে।
যেখানে আদিসপ্তগ্রাম, অম্বিকা কালনা, আরামবাগ, চন্দননগর, পিয়ালী, লালগোলা, মুর্শিদাবাদ, বনগাঁ, কৃষ্ণনগর, আজিমগঞ্জ, দত্তপুকুর, বাঁশবেড়িয়া, দমদম ক্যান্টনমেন্ট, ভগবানগোলা সহ একাধিক স্টেশনে ব্যবসায়ীরা নিজেদের ব্যবসার জিনিসপত্র যেমন- বুটিকের জামাকাপড় কিংবা হাতে তৈরি করা প্রসাধনী জিনিসপত্র বিক্রি করার সুযোগ পাবেন।
আবেদন পদ্ধতি
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য শহর সমগ্র দেশের ব্যবসায়ীদের কাছে এটি অভিনব একটি উদ্যোগ। এই উদ্যোগে সাড়া দেওয়ার জন্য ইতিমধ্যেই একাধিক জায়গা থেকে ব্যবসায়ীরা এখানে আবেদন জানাচ্ছেন। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের গ্রামে গঞ্জে ছড়িয়ে পড়া শিল্পীদের জন্য এটি একটি দুর্দান্ত সুযোগ।
এই দুর্দান্ত প্রকল্পে আবেদন জানানোর জন্য ইচ্ছুক প্রার্থীকে তার নিকটবর্তী রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন মাস্টারের কাছে হাতে-কলমে একটি আবেদন পত্র লিখে জমা করতে হবে। এর জন্য ইচ্ছুক প্রার্থীকে সদা কাগজে তার ব্যবসার সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য এবং নিজের ব্যক্তিগত তথ্য দিয়ে আবেদন পত্রটি পূরণ করতে হবে। এরপর আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় মূল্য সহ আবেদন পত্র ডিসিশন মাস্টারের কাছে জমা করতে হবে।
সরকারের বিনিয়োগ
এক্ষেত্রে বিভিন্ন সময়সীমার জন্য কেন্দ্র সরকারের রেল দপ্তরের পক্ষ থেকে ব্যবসায়ীদের জন্য রেলস্টেশনের একটি দোকান খুলে দেওয়া হচ্ছে। যেখানে ১৫ দিনের ব্যবসা করলে সেই ব্যবসায়ীকে ১৫০০ টাকা ও ২০ ইউনিট বিদ্যুৎ বিল এবং ৩০ দিনের ব্যবসার ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীকে মোট ২০০০ টাকায় এবং ৪০ মিনিট বিদ্যুতের বিল ছাড় দেওয়া হচ্ছে। এর থেকে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ ব্যবহার করলে ব্যবসায়ীকে আবশ্যকভাবে রেল দপ্তরের কাছে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা জমা করতে হবে।